মহেশখালী নৌ রুটে স্পীড বোটে ‘বার্ডিং চার্জ’ নামে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত টাকা উত্তোলনের অভিযোগ

সুমন চন্দ্র দে, মহেশখালী: মহেশখালী-কক্সবাজার নৌরুটে চলাচলকারী স্পিডবোট মালিক ও চালকদের মধ্যে নতুন করে আরোপিত 'বার্ডিং চার্জ' নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন  (বিআইডব্লিউটিএ) কতৃক মহেশখালী কক্সবাজার নৌ রুটের উভয় পাশের দুই ঘাট ২ কোটি চল্লিশ লাখ টাকা নিলামের প্রেক্ষিতে  নতুন ইজারাদারগণের লোকজন কর্তৃক প্রতি ট্রিপে অতিরিক্ত (বার্দিং চার্জ) গুদির টাকা বাবদ ১৫০ টাকা আদায় করায় এই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।  

এই বিষয়ে ১ জুলাই (মঙ্গলবার) মহেশখালী প্রান্তে স্পিডবোট মালিক ও চালকরা এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। মালিকদের পক্ষে কাইসার সিকদার জানান, সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জনতার আন্দোলনের মুখে জেলা প্রশাসন স্পিডবোট ভাড়া ১১০ টাকা থেকে কমিয়ে ৯০ টাকায় নামিয়ে আনে। অথচ এখন নতুন করে প্রতি বোটে ‘বার্ডিং চার্জ’ হিসেবে একবারে ৭৫ টাকা এবং আসা যাওয়া প্রতি ট্রিপে ১৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে, যা অযৌক্তিক ও অবৈধ বলে দাবি করেন তিনি।  

তিনি আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র নিয়ম অনুযায়ী ১৫ আসনের বোটে ৭৫ টাকার চার্জ প্রযোজ্য হলেও, মহেশখালীর অধিকাংশ বোট আকারে ছোট হওয়ায় সেটি প্রযোজ্য নয়। সরকারি গেজেট অনুযায়ী শান্ত নদীতে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ১৪.০১ পয়সা এবং অশান্ত নদীতে ১৬.০১ পয়সা হারে নির্ধারিত থাকলেও মহেশখালী-কক্সবাজার রুটে (প্রায় ৮ কিলোমিটার: শান্ত ৩ কিমি + অশান্ত ৫ কিমি) ভাড়া সর্বোচ্চ ১২০ টাকা হওয়া উচিত। অথচ বিআইডব্লিউটিএ সেটার নির্ধারনের ব্যবস্হা না করে তার পরিবর্তে অতিরিক্ত ১৫০ টাকা টোল আদায় করা হচ্ছে।  

স্পিডবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রিদুয়ান জানান, এই মুহূর্তে ১২০টি বোটের মধ্যে মাত্র ৭০টি চালু রয়েছে। বাকিগুলো বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যন্ত্রপাতির উচ্চমূল্যের কারণে অচল হয়ে আছে।যা মুহূর্তে মালিকগন কতৃক মেরামত সম্ভব নয়! তার উপর এই অতিরিক্ত চার্জ আমাদের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা।  

এদিকে, কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, “যদি নতুন ইজারাদারকে বার্ডিং চার্জ দিতেই হয়, তাহলে সেটা মালিকের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে বাধ্য হয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা ছাড়া উপায় থাকবে না।”  

সরেজমিনে মহেশখালী ও কক্সবাজার জেটিতে দেখা গেছে, উভয় প্রান্তের নতুন ইজারাদাররা 'সরকারি গেজেট অনুযায়ী' চার্জ নেওয়ার দাবি করলেও তারা কোনো উপযুক্ত ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি। তারা জানিয়েছেন, শিগগিরই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাজির করবেন। 

উল্লেখ্য কক্সবাজারের নতুন বাহার ছড়া এলাকার জনৈক মিন্টু নামের এক ব্যবসায়ি কক্সবাজার মহেশখালীর উভয় পাশের ঘাট নিলাম ডেকেছে বলে জানা গেছে! নৌরুটে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন বোট মালিক, চালক সহ  সচেতন স্থানীয় জনতা!

Post a Comment

0 Comments