কক্সবাজারে কিশোর’কে অপহরণের পর মুক্তিপন না পেয়ে কটেজে নিয়ে হত্যা: পালিয়ে গেছে কটেজ ম্যানেজার রবিউল


লোকমান ইসলাম রানা: 
কক্সবাজারের অপরাধের স্বর্গরাজ্য খ্যাত হোটেল মোটেল জোন এলাকার কটেজ জোনের “লাইট হাউজ রিসোর্ট” থেকে আব্দুল হালিম রিয়াদ নামে এক কিশোরের হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সন্ধ্যার পরে ‘লাইট হাউস রিসোর্ট’ এর ২০৬ নং কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।  নিহত কিশোর কক্সবাজারের রামু উপজেলাস্থ জোয়ারিয়ানালা এলাকার বাসিন্দা। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইলিয়াস খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

নিহতের চাচা মো. আলমগীর জানান, আব্দুল হালিম রিয়াদ গত ৪ মাস ধরে কক্সবাজার বাস টার্মিনালে ব্রাক অফিসে প্রশিক্ষণ শেষ করে এক শিক্ষকের মাধ্যমে চাকরির জন্য পরিচয় হয় তালহা নামের এক যুবকের সাথে। এই তালহা’ই রিয়াদকে চাকরির জন্য রয়েল পার্ক সুইট হেটেলে জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আসতে বলে। 

মো. আলমগীর বলেন, “পরে রিয়াদকে অপহরণ করে ৭ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করা হয়। এই নিয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অভিযোগও দায়ের করে নিহতের পরিবার। পরে মুক্তিপণ নিয়ে উভয় পক্ষের দেন-দরবার এর মধ্যেই কটেজ জোনের লাইট হাউজ রিসোর্টের একটি কক্ষ থেকে রিয়াদের হাত পা বাঁধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।” 

‘লাইট হাউস রিসোর্টের’ কর্মচারী বলেন, দুপুরে রুম চেক-আউট করতে গিয়ে ২০৬ নং রুমে হাত পা বাঁধা মৃতদেহ দেখে বিষয়টি ম্যানেজার (খুরুশকুলের বাসিন্দা) রবিউলকে জানানোর সাথে সাথে সে পালিয়ে যায়। অন্যদিকে রিয়াদের সাথে কটেজে থাকা লোক এবং কটেজ মালিক মো: সেলিম পলাতক রয়েছে। তবে রিয়াদের সাথে থাকা লোকটি তালহা কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস বলেন, “ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এই ঘটনা পুলিশ তদন্ত করছে এবং কে বা কারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।” 

জানা যায়, কটেজ জোনের প্রায় বেশিরভাগ কটেজে দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়াভাবে চলছে মাদক ও পতিতা ব্যবসা। অসংখ্যবার অভিযান চালিয়ে অপরাধিদের গ্রেফতার করলেও কিছু কিছু অসাধূ কটেজ মালিক ও ম্যানেজাররা তা তোয়াক্কা না করে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ মাদক ও নারী দেহের ব্যাবসা। এছাড়াও ‘লাইট হাউস রিসোর্ট’ এর ম্যানেজার রবিউল আলম দীর্ঘদিন ধরে কটেজ জোনে মাদক ও পতিতা ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি এক তরুনীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে উক্ত হোটেলের ম্যানেজার রবিউল। শুধু তাই নয়, উক্ত তরুণীকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষনের সময় তা ভিডিও ধারন করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে একের পর এক ধর্ষণ করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে ন্যায় বিচারের আশায় অচিরেই মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান ভুক্তভোগী তরুনী।

Post a Comment

0 Comments