রামুর ধেচুয়াপালং তহসিল অফিসে বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য, বাতিল খতিয়ানেও দেয়া হয় দাখিলা..!

আপন ডেস্ক: 

🔴তহসিলদারের অনিয়ম-দুর্নীতি ও ভুমি কেলেঙ্কারির একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও রহস্যজনক কারনে কোন ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ 

🔴ডিসি-ইউএনও-এসিল্যান্ড’র আশকারায় দিনদিন উশৃঙ্খল হয়ে উঠছেন সলিম উল্লাহ: ভুক্তভোগীদের অভিযোগ

কক্সবাজারের রামু উপজেলার ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে (খুনিয়াপালং ইউনিয়ন) এবার নতুন দূর্নীতির সন্ধান মিলেছে। নানা অনিয়মের মাধ্যমে সৃজিত কিছু খতিয়ান জেলা প্রশাসকের আদেশে বাতিল এবং স্থগিত করা হলেও  এসব বাতিল ও স্থগিত হওয়া খতিয়ানেও ঘুসের বিনিময়ে দাখিলা দিচ্ছেন খোদ তহসিলদার নিজে; এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে।  

অভিযোগ রয়েছে, তহসিলদার সলিম উল্লাহ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব বাতিল ও স্থগিত হওয়া খতিয়ানের দাখিলা প্রদান করছেন, যা আইনত সম্পূর্ণ বেআইনি এবং স্পষ্টভাবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী- ভয়াবহ অনিয়ম-দুর্নীতি-জালিয়াতি ও ভুমি কেলেঙ্কারির মুল হোতা শত শত অনিয়মে অভিযুক্ত তহসিলদার সলিম উল্লাহর অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে  একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও রহস্যজনক কারনে কোন ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে দিনদিন আরও উশৃঙ্খল হয়ে উঠেন তহসিলদার সলিম উল্লাহ। 

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা বলেন, ইউএনও, এসিল্যান্ড ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতভাবে অসংখ্য অভিযোগ জমা হলেও অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে সলিম উল্লাহর .বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি তারা। বরং তাদের আশকারায় ঘুসের বিনিময়ে সরকারী সেবা প্রদান এবং ঘুস না পেলে উল্টো প্রতিবেদন দাখিল করাসহ সেবা প্রার্থীদের নানান হয়রানি করার সাহস পাচ্ছেন বলে অভিযোগ- ভুক্তভোগীদের। 

তথ্যসূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে সরকারি আদেশের মাধ্যমে কক্সবাজারে কিছু বন্দোবস্তী খতিয়ান বাতিল ঘোষণা করা হলেও তহসিলদার সলিম দালালচক্রের সহায়তায় নির্দিষ্ট কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে অবৈধভাবে দাখিলা প্রদান করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, প্রতি খতিয়ান দাখিলায় নেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের ঘুস।

প্রতিবেদকের হাতে আসা কাগজপত্রে চলমান প্রশাসনিক দুর্নীতির একটি বাস্তব ও উদ্বেগজনক চিত্র প্রতিয়মান হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৫ই মার্চ দক্ষিণ মিঠাছড়ি মৌজার ৮৩৫ নং খতিয়ানের দাখিলা কাটা হয়েছে। একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাজারকুল মৌজার ১৮৮২ নং খতিয়ানেরও দাখিলা কাটা হয়েছে। অথচ এসব বন্দোবস্তী খতিয়ান স্থগিত করা হয়েছিল কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের এক আদেশে।

সচেতন মহলের অভিমত, ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত তহসিলদাররা জনগণের সেবক হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় সেবা না দিয়ে অর্থলোভে বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়েন। তাদের কেউ কেউ নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ঘুষ ও অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে এমন কাগজপত্র বা দাখিলা প্রদান করেন, যা আইনত অবৈধ ও দন্ডনীয় অপরাধ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা  বলেন, বাতিল খতিয়ানে দাখিলা দেওয়া আইনগত অপরাধ। তাছাড়া এমন ঘটনায় স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত দাবি করেছেন, যাতে ভূমি অফিসের দুর্নীতি বন্ধ হয় এবং নিরীহ জমির মালিকেরা হয়রানি থেকে রক্ষা পান।

এদিকে ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার সলিম উল্লাহকে মুঠোফোনে স্থগিত খতিয়ানের দাখিলা কাটা যায় কিনা; প্রতিবেদক কর্তৃক এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

কক্সবাজার জেলা বারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিপ্ত বড়ুয়া বলেন,তহসিলদারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার সকল খতিয়ান সংরক্ষিত থাকে। সেখানে স্থগিত খতিয়ানের দাখিলা প্রদানের বিষয়টিতে স্পষ্ট প্রতিয়মান যে তহসিলদার অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এমন কাজ করেছেন। যেটি আইনগতভাবে অপরাধ। এসব গুরুতর দূর্নীতির ঘটনায় দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাপূর্বক শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে এসব অপরাধ থামবে না।

এ বিষয়ে রামু সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বরূপ মুহুরী বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Post a Comment

0 Comments