হেলাল উদ্দিন, উখিয়াঃ কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব দরগারবিল এলাকার আলী আহমেদর ছেলে ডেকোরেশন ব্যবসায়ী ছৈয়দ নুর (৪০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২১ জুলাই ২০২৫) বিকাল আনুমানিক ৪টা ৩০ মিনিটের সময় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের আজুখাইয়া ফকির পাড়া এলাকার গহীন পাহাড় থেকে ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি জাফর ইকবালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত,পা বাধা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় এক রোহিঙ্গা যুবক সহ জন'কে আটক করছে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশ।
নিহত ছৈয়দ নুরের পরিবার অভিযোগ করে বলেন, গত ১৮ জুলাই ২০২৫, বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আজু খাইয়া এলাকার উছিউর রহমানের ছেলে মোঃ ইসমাইল তাকে ডেকে রেজুআমতলী নিয়ে যায়। সেখান থেকে ইসমাইল সহ আরো অজ্ঞাত ৩-৪ জন মিলে তাকে অপহরণ করে বাইশফাঁড়ি এলাকার গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং তারা পরিবারকে একাধিকবার হুমকি দেয় টাকা না দিলে ‘মৃতদেহও খুঁজে পাবে না’ বলে।
এবিষয়ে নিহত ছৈয়দ নুরের স্ত্রী জোবাইদা বেগম বাদী হয়ে গত (১৯ জুলাই -২০২৫)নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছে বলেও জানান।
স্থানীয়রা ধারণা করছে, অপহরণকারীরা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছৈয়দ নুরকে হত্যা করে পাহাড়ি এলাকায় মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় গেছে বলে ধারণা করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মাশরুল হক বলেন, গত ১৯ জুলাই নিহতের স্ত্রী জুবাইদা বেগম (২২) বাদি হয়ে থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। মামলায় গ্রেপ্তার করা আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে । এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
ছৈয়দ নুরের মৃত্যুর খবরে রাজাপালং ইউনিয়নের দরগারবিল এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শোক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ছৈয়দ নুরের এ নির্মম হত্যাকাণ্ড কেবল তার পরিবারের জন্য নয়, উখিয়ার সাধারণ মানুষের জন্যও এক গভীর বেদনার নাম। এ ঘটনায় অপহরণ, মুক্তিপণ এবং পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ড—সবকিছুই সমাজে সন্ত্রাস ও নিরাপত্তাহীনতার চিত্র স্পষ্ট করছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
0 Comments