নিজস্ব প্রতিবেদক: টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চোরাই রেশন সামগ্রীসহ এক পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত বিশেষ যৌথ টহল অভিযানে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রাইক্ষ্যং এলাকায় একটি গুদাম থেকে বিপুল পরিমাণ রেশন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয় গুদামের ম্যানেজার মোঃ ফারুক (২৭), পিতা- গোলাম কাদের, রাইক্ষ্যং ৩ নং ওয়ার্ড, উনচিপ্রাং, টেকনাফ।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনা-পুলিশের যৌথ টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে গুদাম সংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েকজন শ্রমিক পালিয়ে যায়। পরে একটি সন্দেহজনক পিকআপ আটক করা হলে গুদামের ম্যানেজার ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক জানায়, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডঋচ) কর্তৃক রোহিঙ্গাদের জন্য সরবরাহকৃত খাদ্য সামগ্রী গুদামজাত করে প্যাকেট পরিবর্তন করে তা স্থানীয় ডিলারদের কাছে পুনরায় সরবরাহ করা হয়।
গুদাম তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ চোরাই রেশন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে-চাল ২১৫০ কেজি, তেল ১৭০ লিটার, পেঁয়াজ ৩২০ কেজি, আটা ১৫২০ কেজি, সাবান ৭৫০০ পিস, হলুদ গুঁড়া ৬০০ কেজি, চিনি ৭৫০ কেজি, ডাল ৫৫০ কেজি, ব্যাটারি ১২ ভোল্টের ৮টি, ৬ ভোল্টের ২টি বস্তাসহ সেলাই মেশিন ১টি।
ফারুক আরো জানায়, উনচিপ্রাং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতির প্রত্যক্ষ মদদে এই গোডাউন পরিচালিত হয়ে আসছিল। এ চক্রের সঙ্গে ক্যাম্প-২২ এর রোহিঙ্গা ব্যবসায়ী মনু মাঝি ও আরও কয়েকজন যুক্ত রয়েছে, যারা ক্যাম্প থেকে রেশন সংগ্রহ করে এই গুদামে সরবরাহ করতো।
জানা যায়, এসব রেশন মালামাল স্থানীয় ডঋচ ডিলারদের কাছে পুনরায় বিক্রির পাশাপাশি মিয়ানমারে পাচার করা হতো। পাচারের জন্য উনচিপ্রাং এলাকার বিভিন্ন নদীপথ ব্যবহার করা হতো গভীর রাতে।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, জজজঈ অফিস এবং ক্যাম্পে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আটককৃত ব্যক্তি ও জব্দকৃত মালামাল হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়িতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, মাদক ও অবৈধ রেশন ব্যবসা প্রতিরোধে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
0 Comments