জাফর ইকবাল: আজ বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫। সোনাদিয়া দ্বীপের স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যথারীতি খোলা থাকলেও কোনো শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। সকালে শিশুরা প্রতিদিনের মতো স্কুলে আসলেও শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় শ্রেণিকক্ষে কোনো পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়নি। এতে হতাশ হয়ে অনেক শিক্ষার্থী পুনরায় বাড়ি ফিরে যায়।
স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা জানান, প্রায় সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। স্কুল খোলা থাকলেও শিক্ষকরা সময়মতো উপস্থিত হন না বা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকেন। ফলে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্বীপের শিশুদের শিক্ষা জীবনমান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশেষ করে দ্বীপাঞ্চলের মতো পিছিয়ে পড়া এলাকায় শিক্ষার সুযোগ সীমিত হওয়ায় সরকারি স্কুলগুলোই এখানকার শিশুদের শিক্ষার একমাত্র ভরসা। কিন্তু শিক্ষক সংকট ও দায়িত্বহীনতার কারণে সেই আশাও ধীরে ধীরে নিভে যাচ্ছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের বারান্দায় শিশু শিক্ষার্থীরা মাটিতে বসে আছে, খেলছে বা বইপত্র খুলে নিজের মতো করে সময় কাটাচ্ছে। তাদের চোখে-মুখে বিরক্তি ও হতাশা। স্কুলের মূল সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই দেখা যায়—তালাবদ্ধ গেট। পুরো ভবন নিশ্চুপ ও ফাঁকা।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, শুধু আজকে নয় , প্রায়ই এমন হয়। আমাদের ছেলে মেয়ে স্কুলে যায় ঠিকই, কিন্তু স্যার-ম্যাডাম আসে না। গরিব মানুষ আমরা, এই স্কুলই একমাত্র ভরসা।
তবে শিক্ষক অনুপস্থিতির মূল কারণ হিসেবে জানা গেছে. সোনাদিয়া দ্বীপে যাতায়াতের সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত সীমিত। তাছাড়া শিক্ষকরা মহেশখালী উপজেলা থেকে নৌপথে দ্বীপে আসেন।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, জোয়ার-ভাটার সময়সূচি, ট্রলার সংকট ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবের কারণে প্রায়শই তারা সময়মতো স্কুলে পৌঁছাতে পারেন না বা আসেন না।
এর ফলে বিদ্যালয় খোলা থাকলেও পাঠদান কার্যক্রম প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা দিন দিন উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে।
স্থানীয় জনগণের দাবি:. সোনাদিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে, বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্বীপের শিক্ষাব্যবস্থায় বিশেষ নজর দিতে হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
স্থানীয়রা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যাতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন না হয়।
0 Comments