নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার শহরের ৯নং ওয়ার্ড বাদশাঘোনা এলাকায় মা ও ছেলে মিলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকের হাট বসিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ বেচে গাঁজা আবার কেউ বা ইয়াবা। তাদের কারণে এলাকায় বেড়েছে মাদকসেবীদের আনাগোনা।
দিন দিন এলাকাবাসীদের মাঝেও বাড়ছে মাদকাসক্তের সংখ্যা।মা ও ছেলের মাদক বানিজ্যের কারণে এখন এলাকাবাসির রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য এলাকাবাসীর। তাই এমন পরিস্থিতিতে মাদককে না বলতে ও মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করতে একত্রিত হয়েছে এলাকাবাসী।
কক্সবাজার সদর পৌরসভার বাদশাঘোনা এলাকায় স্থানীয়দের অভিযোগ,কসাই নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ সাকিল করেন ইয়াবা ব্যাবসা ও তার মা কইতুরি (প্রকাশ নাম) ওরফে গাজাঁ সুন্দরী করেন গাঁজার ব্যাবসা এবং এরা মা ও ছেলে মিলে বাদশা ঘোনা এলাকায় মাদকের হাট বসায় প্রতিনিয়ত।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মদ সাকিল(২৮) কক্সবাজার শহরে দীর্ঘদিন যাবত পাইকারি ইয়াবা বিক্রি করে থাকেন। তথ্য নিয়ে দেখা যায় লাইট হাউস কটেজ জোনের বেশ কয়েকজন খুচরা ব্যাবসায়ীকে সাকিল ইয়াবা সরবরাহ দিয়ে থাকেন। যাদের মধ্যে দেখা যায় কটেজ জোনের রুবি ওরফে ভাবি, হোটেল সি পার্ল,১,২ সহ একাধিক খুচরা ব্যাবসায়ীকে ইয়াবা ট্যাবলেট সাপ্লাই দিয়ে আসেন।
বিশেষ করে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর পরই সাকিল কয়েকজন পুলিশের তালিকা ভুক্ত ছিনতাইকারীদের সাথে নিয়ে ইয়াবা বিক্রির উদ্দেশ্যে ছুটে বেড়ায় হোটেল-মোটেল জোন ও লাইট হাউস কটেজ জোনে।
সরেজমিনে আরও জানা যায়, মোঃ সাকিলের মা প্রকাশ (কইতুরি) ওরফে গাঁজা সুন্দরী তার নিজ বাসায় বসেই করেন গাঁজা বিক্রি। যা এলাকায় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা প্রতিবেদককে জানান।
তারা বলেন, মা ও ছেলের মাদক ব্যাবসার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে পুরো এলাকা। এলাকাবাসী আরো জানায় কসাই নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ সাকিল পুরো কলাতলী এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি করেন এবং লাইট হাউস কটেজ জোন নামে এক যায়গায় বেশ কয়েকজন ব্যাবসায়ীকে মাদক সাপ্লাই দিয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, সাকিল এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি সহ বিভিন্ন অপরাধ করে থাকেন এবং তার কাছে রয়েছে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র।
সাকিলের মা কইতুরি তার নিজ বাসা বাদশা ঘোনা এলাকায় প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি করে বাদশাঘোনা সহ আশপাশের এলাকায়ও দেদারসে ইয়াবা ও গাঁজা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। যার কারণে বাড়ছে খুচরা মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীর সংখ্যা।
সম্প্রতি বাদশাঘোনা এলাকায় গেলে মাদক ব্যবসায়ী ওই মা ছেলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীরা আরও বলেন, সাকিল টেকনাফ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এসব মাদক নিয়ে এসে শহরে দ্বিগুন দামে বিক্রি করেন। তারা মা, ছেলের কারণে এলাকায় উঠতি বয়সের কিশোর, যুবকরা মাদক আসক্ত হয়ে পড়ছেন।তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছে। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার মাদকসহ সাকিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলও খেটেছে। তবে জেল থেকে বের হয়ে আবারো থেমে নেই তার মাদক ব্যবসা।
এলাকাবাসীরা ক্ষোভের সাথে জানান, এই মা -ছেলে এত সাহস পায় কিভাবে? এখানে পুলিশেরও গাফিলতি আছে বলেও উল্লেখ করেন স্থানীয়রা।
সূত্র জানায়, রাস্তাঘাটে মা বোন চলাফেরা করতে পারছে না। এলাকায় চুরি বেড়েছে। তরুণ ও যুব সমাজ মাদকাসক্ত হচ্ছে। স্কুলে যাওয়া আসার পথে ছাত্রীদের উত্যাক্ত করা হচ্ছে। তাদের মাদক ব্যবসা কোনোভাবেই প্রতিহত করা যাচ্ছে না। গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারের কিশোর, তরুণ, যুবকরা ক্রমেই মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
বর্তমান, মোঃ সাকিল ও তার মা প্রকাশ কইতুরিকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনলে,আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার হুশিয়ারিও দেন এলাকার সচেতন মহল।
মাদক ব্যবসায়ী মোঃ সাকিল ও তার মায়ের প্রতি হুশিয়ারি দিয়ে তরুণ সমাজ কর্মীরা বলেন, আগামীতে মাদক বিক্রি ও সেবনের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে অবস্থান নিয়ে এলাকাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পুলিশকে আরও তৎপর হয়ে দায়িত্ব পালন ও সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহবান জানানো হয়।
একাধিক বাসিন্দা জানান, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরাও এই সড়ক দিয়ে সচরাচর যাতায়াত পর্যন্ত করেন না। এই সুযোগে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা ৮ থেকে ১০ জন তরুণ দল বেঁধে প্রতিনিয়ত এখানে ইয়াবা বিক্রি করেন, আড্ডা দেন।
এবং মাদকের ক্রেতারা সাধারণত মোটরসাইকেলে করে সাকিলের বাড়িতে আসেন। এলাকায় তার বাসার নাম মাদকসম্রাট মোঃ সাকিলের মাদকের আস্তানা বলে পরিচিত।
তবে এ বিষয়ে মাদক বিক্রেতা সাকিল ও তার মায়ের সাথে মুঠো ফোনে বার বার কথা বলার চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
0 Comments