আপন কন্ঠ রিপোর্ট: অবশেষে সুগন্ধা পয়েন্টের সেই আলোচিত সরকারি জমিতে দুদকের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টে ২০০ কোটি টাকা মূল্যের খাস জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক। সোমবার (৫ মে) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন কক্সবাজার কার্যালয়ের একটি দল ‘আওয়ামীচক্রের’ দখল করা খাস জমিতে নির্মাণাধীন মার্কেটটিতে অভিযান চালিয়ে এ তথ্য জানায়।
জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে কয়েদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে লেখালিখি ও সমালচনার ঝড় বইছে। তারই সুত্রধরে দুদকের এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে মনে করছেন বিভিন্ন মহল। সোমবার দুপুরে দুদকের কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়া বাবুর নেতৃত্বে দখল করে নির্মাণাধীন মার্কেটটিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মার্কেটে অবস্থান করা লোকরা গেটে তালা লাগিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে দুদকের দলকে গেটের ভেতর ঢুকতে দেয়নি।
দুর্নীতি দমন কমিশন কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়া বাবু পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জমিটি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। জালিয়াতির মাধ্যমে দখলবাজচক্র দখলে নিয়ে অবৈধ দোকানপাট নির্মাণ করছে এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এখন আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, চক্রটি দুদকের দলকে পরিদর্শনে বাধা প্রদান করেছে। এ বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, সাগর পারের ঝিলংজা মৌজার দুই একর ৩০ শতক খাসজমি নিয়ে চক্রটি কক্সবাজার সদর ভূমি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মচারির যোগসাজশে ভুয়া খতিয়ান করে। জমির মালিকানা দেখানো হয়েছে জনৈক স্বেচ্ছানন্দ দাশ নামের এক ব্যক্তিকে। সেই ভুয়া খতিয়ান নিয়ে চক্রটি উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা হাসিল করে জমির চারদিকে টিনের উঁচু ঘেরা দিয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়।
চক্রটির নেতৃত্বে রয়েছেন কক্সবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সহসভাপতি ওবায়দুল হোসেন। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগার পরিচয় দিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়েও রহস্যজনকভাবে দাপটের সাথে অবৈধ বাণিজ্যের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ পরিচয়ধারী ওবায়দুল ১২টি মামলার আসামি। তবে সব মামলায় জামিনে রয়েছে তিনি। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় জেলা বিএনপি অফিস পোড়ানোর মামলায় দুই মাস কারাগারে আটকও ছিলেন।
এদিকে আওয়ামী লীগার পরিচয় দিয়ে অবৈধ কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পর নানাভাবে চাপের মুখে পড়ে ওবায়দুল তার চক্রে এখন ঠাঁই দিতে শুরু করেছেন বিএনপির লোকজনকে। এমনকি যে জেলা বিএনপি অফিস পোড়ানোর মামলায় ওবায়দুল আসামি সেই বিএনপি অফিস তিনি আবার নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি করেছেন। এ নিয়ে কক্সবাজারের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরিচয়ধারী ওবায়দুল জেলা বিএনপির অফিস নির্মাণ করে দিয়েছে বলে অনলাইন গণমাধ্যমে দাবি করেছে, যা শতভাগ মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য। একজন ভূমি দখলবাজের এমন বক্তব্যে আমরা বিএনপির নেতাকর্মীদের মানহানি হয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে ইতিমধ্যে আইনগত নোটিশ।’
0 Comments